ডিমের যত কথা

সহজলভ্য পুষ্টির উৎস হিসেবে ডিমের কোন বিকল্প নেই। ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, ডি, ই সহ আরো নানা উপাদান যা শরীরের জন্য খুবই উপকারি। এজন্য ডিমকে বলা হয় সুপার ফুড। ডিম সম্পর্কে অনেকের মনে ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞান এখন আর সমর্থন করেনা। হৃদরোগ সহ নানান রোগের জন্য অনেকে ডিমকে দায়ী করেন যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বরং সঠিক পরিমাণ ডিম খেলে এসব রোগ অনেকাংশে কমে যায়।

উপকারিতা
  • সুস্থ থাকতে দেহে প্রোটিনের আবশ্যকতা রয়েছে। দৈনিক প্রোটিন চাহিদার ৬ গ্রাম পূরণ হয় ১ টি ডিম থেকে।
  • ডিমে রয়েছে সালফার যা চুল এবং নখের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
  • ডিমের কুসুম ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-বি এর খুবই ভাল উৎস। ভিটামিন-এ ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি যোগায়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং মাংসপেশির গঠনে সহায়ক।
  • এছাড়া ডিমে রয়েছে জিঙ্ক, আয়রন এবং ফসফরাস। জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আয়রন শরীরের ঘাটতি মেটাতে পারে সহজেই। ফসফরাস হাড় এবং দাঁত মজবুত করে।
  • HDL মূলত আমাদের শরীরের জন্য ভাল কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। ডিম HDL এর খুবই ভাল উৎস। শরীরে ভাল কোলেস্টেরল বা HDL এর পরিমান বেশি থাকলে হৃদরোগ, স্ট্রোক সহ নানান ধরণের রোগের ঝুঁকি কম থাকে। আমাদের শরীর প্রতিনিয়ত কোলেস্টেরল উৎপাদন করে থাকে। পরিমাণমত ডিম গ্রহনের ফলে শরীর অতিরিক্ত কোলেস্টেরল উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান কমে যায়।
  • ডিমে রয়েছে ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন-ই। ভিটামিন-ডি পেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।আর ভিটামিন-ই কোষ এবং ত্বকে উত্‍পন্ন ফ্রি র‍্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয় এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
  • খাবারের পাশাপাশি রূপচর্চায়ও রয়েছে ডিমের নানাবিধ ব্যবহার। ডিমের সাদা অংশ ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে ত্বক কোমল এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে সজীব ও সুন্দর করতেও ডিমের রয়েছে কার্যকরী ভুমিকা।
অপকারিতা
  • একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ২০০০ ক্যালরি প্রয়োজন। একটি সিদ্ধ ডিমেই রয়েছে ৭৮ ক্যালরি। অতিরিক্ত ডিম খাবার প্রবণতা শরীরের ক্যালরির পরিমাণ বাড়িয়ে স্থূলতাজনিত নানান রোগের উপসর্গ তৈরি করে।
  • অনেকে কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করেন। অনেক সময় কাঁচা ডিমে বিষাক্ত স্যালমোলিনা থাকে যা মৃত্যুর কারন ঘটায়। তাই পারতপক্ষে কাঁচা ডিম না খাওয়াই ভাল।
  • যারা কিডনিজনিত নানান রোগে ভোগেন তারা দিনে একটির বেশি ডিম না খাওয়াই ভাল। কারন অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনিজনিত রোগকে আরো জটিল করে তোলে।

 

নিউট্রিশন ফ্যাক্ট ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *